,

প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারের দুয়ারে

নিজিস্ব প্রতিবেদকঃঢাকার ২০টি আসনের ১৫৭ প্রার্থীকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে নিজ নিজ প্রতীক। এর মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণায় আর কোনো বাধা থাকল না। তবে তা হতে হবে দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে। এর ব্যত্যয় হলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। অন্যদিকে প্রতীক বুঝে পেয়ে আনন্দ প্রকাশের পাশাপাশি সুষ্ঠু নির্বাচনে নিজেদের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রার্থীরা।

পাশার দান নয়, ভাগ্য নির্ধারণের জটিল কোনো সমীকরণও নয়। পছন্দের প্রতীক পাওয়ার জন্যই হয়েছে লটারি। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, বিশেষ একটি প্রতীক একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী দাবি করলে নিজেদের মধ্যে সমঝোতার পরামর্শ দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। সেখানে একমত না হলে নিয়ম আছে লটারির। পছন্দের ঈগল প্রতীক পাওয়া এক প্রার্থী এটিকে তুলনা করলেন প্রাথমিক বিজয়ের সঙ্গে।

আওয়ামী লীগের দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর বাইরেও ঢাকা-৫ আসনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন হারুনর রশীদ মুন্না। বিরোধী পক্ষ বলতে প্রতিদ্বন্দ্বী তারই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী। দিনভর প্রতীক বরাদ্দের এই আয়োজনে বড় দলগুলোর হেভিওয়েট প্রার্থীরা সশরীরে আসেননি প্রতীক নিতে। তবে প্রথমবারের মতো নির্বাচনে অংশ নেয়া চিত্রনায়ক ফেরদৌসের উপস্থিতি কিছুটা আমেজ ছড়ায়।

ফেরদৌস বলেন, আমি এই আসনের মান রক্ষা করব। নেতাকর্মীসহ এলাকাবাসীকে নিয়ে চেষ্টা করব বিপুল ভোটে নৌকার বিজয় ঘটিয়ে বিজয়ের মালা প্রধানমন্ত্রীকে পরিয়ে দিতে।

প্রতীক বরাদ্দের মাধ্যমে শুরু হয়ে গেল নির্বাচনের মূল আমেজ প্রচার-প্রচারণা। ভোট গ্রহণের ৪৮ ঘণ্টা আগেই শেষ করতে হবে প্রচারণার আনুষ্ঠানিকতা।

রাজধানীর বাইরেও নৌকা-লাঙ্গলসহ নানা প্রতীক বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রতীক পেয়ে প্রচারণায় নেমে পড়েছেন অনেকে। সমর্থকদের স্লোগানে মুখর রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়।

খুলনার ছয়টি আসনে ৩৪ প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ১০টি রাজনৈতিক দলের ২৭ জন এবং সাত জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ইয়াসির আরেফিন।

সিলেটে প্রতীক পেয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছেন প্রার্থীরা। গতকাল সোমবার সকাল থেকে সিলেট জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। ছয়টি আসনের ৩৩ প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। কুয়েত অবস্থান করায় পররাস্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের পক্ষে প্রতীক নেন দলের নেতারা।

ময়মনসিংহের ১১টি আসনের প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রার্থীদের সমর্থকদের শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। কুমিল্লার ১১টি আসনে ৮৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক তুলে দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা খন্দকার মুশফিকুর রহমান।

রাজবাড়ীর দুটি আসনে ১১ প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রার্থীদের আচরণবিধি মেনে প্রচারণা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান। রাজশাহীতে প্রতীক নেন স্বতন্ত্রপ্রার্থী চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহী।

প্রতীক পেয়েই ভোটারদের কাছে ছুটে যান নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক। উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন ভোটারদের কাছে। গোলাম দস্তগীর বলেন, আমরা নির্বাচন করব, আমরা উন্নয়নের নির্বাচন করব। আমরা উন্নয়ন করেছি, সেই উন্নয়ন দেখেই জনগণ নৌকাকে ভোট দেবে।

উৎসবমুখর পরিবেশে, প্রচারণা শুরু হয়েছে চট্টগ্রামেও। রাজশাহী-খুলনায় নির্বাচনি আচরণবিধি মেনে প্রচার কাজ চালানোর আশ্বাস প্রার্থীদের। চট্টগ্রাম-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহবুব উর রহমান রুহেল বলেন, আমার ২০ বছরের যে পদচারণা মিরেরসরাইয়ে, মানুষকে সেবা করার, সে কারণে তাঁরা আমাকে এক্সসেপ্ট করে নিচ্ছে। আমি অনেক আশাবাদি যে এখানে জয়ী হব।

খুলনা-১ আসনে নৌকার প্রার্থী ননী গোপাল মন্ডল বলেন, ভোটারদের সমর্থন আকর্ষণ করতে সমর্থ হলে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলে আমি মনে করি।

মাগুরা-১ আসনে নৌকার প্রার্থী ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান প্রতীক পেয়েই টুঙ্গিপাড়ায় যান বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সুষ্ঠু নির্বাচনের আশা তার।

সাকিব আল হাসান বলেন, ভোটাররা যেন কেন্দ্রে এসে ৭ জানুয়ারি ভোট দেয়। যাকে ইচ্ছা তাকেই ভোট দিতে পারবে। আমি আশা করব, সবাই যেন আমাকেই ভোট দেয় কিন্তু যদি তাও না দেয় কোনো আপত্তি নেই। আমি চাই সবাই যেন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।

শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পথে বাধা দিলে কঠোর আইনি ব্যবস্থার আহ্বান নওগাঁ -১ আসনে নৌকার প্রার্থী খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ থেকে সুস্ঠ সুন্দর গ্রহণযোগ্য মুলক উৎসবমুখর নির্বাচন করতে যাতে পারে সেটাই এবার দেখিয়ে দেওয়া হবে।

প্রতীক পেয়েই প্রার্থী ও সমর্থকদের নিয়ে জোরেশোরে গণসংযোগে নেমেছেন সিলেট, বরিশাল, ময়মনসিংহ, বগুড়া, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালীসহ বিভিন্ন জেলার প্রার্থীরা। প্রার্থীদের আচরণবিধি মেনে চলার আহ্বান নির্বাচন কমিশনের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *